হাঁটু প্রতিস্থাপনে ভয় কিসের?

হাঁটুর ব্যথা থেকে রেহাই পেতে স্থায়ী সমাধান হচ্ছে হাঁটু প্রতিস্থাপন। কিন্তু এই নী-রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে রয়েছে ইনেক অমূলক ও ভ্রান্ত ধারণা। সেইসব ভুল ভাবনার মূলে কুঠারাঘাত করতে কিছু জরুরি প্রশ্নের জবাব দিলেন বিশিষ্ট অস্থিশল্যবিদ তথা জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জেন ডাঃ কল্যান গুহ ৷
হাঁটু প্রতিস্থাপন আসলে কী?
মানুষের হাঁটুতে কার্টিলেজ নামক এক ধরনের টিস্যু থাকে। অষ্টিও। আথ্রাইটিসে হাঁটুর এই কার্টিলেজ সম্পূর্ণ রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওষুধ বা ইঞ্জেকশান দিয়ে এই ক্ষতি মেরামত করা সম্ভব হয় না। তখন ক্ষতিগ্রস্থ হাঁটুকে চাঙ্গা করে তুলতে কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয় যাকে চিকিৎসার পরিভাষায় টোটাল নী-রিপ্লেসমেন্ট। বলে।
এই সার্জারিতে আদৌ কোনাে ভয়ের কিছু আছে কী?
আর পাঁচটা সাধারণ সার্জারির মতােই সরল প্রক্রিয়া এই সার্জারিতে। প্রয়ােজন বুঝে স্পাইনাল কর্ডে ইঞ্জেকশান দিয়ে। লােকাল অ্যানাস্থেশিয়া করে অথবা সারা দেহ অবশ করার জন্য জেনারেল অ্যানাস্থেশিয়া করে কৃত্রিম অঙ্গ পতিস্থাপন করা হয়। সার্জারিতে সময় লাগে বড়জোর এক ঘন্টা। সার্জারির দুদিন পর থেকেই হাঁটু ভাঁজ করা ও হাঁটানাের চেষ্টা শুরু হয়। তৃতীয় দিন। বাড়ী চলে যেতে পারেন। সার্জারির পর ব্যথা কমানাের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়।
ঠিক কখন বোঝা যাবে যে হাঁটু বদলানাে দরকার?
আর্থাইটিস যখন লাগাম ছাড়া হয়ে যায় এবং যখন ওষুধ, ইঞ্জেকশান, এমনকি স্টেরয়েড দিয়েও ব্যথাকে বাগ মানানাে যায়
তখন হাঁটু প্রতিস্থাপন করা ছাড়া কোনাে উপায় থাকে না। এখানে উল্লেখ্য যে হাঁটু প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে বয়স কোনাে অন্তরায় নয়। হাঁটুর কারণে স্থবির জীবন থেকে রােগীকে স্বাভাবিক গতিময় জীবনে ফিরিয়ে দেওয়াই হচ্ছে আসল লক্ষ্য।
অপারেশনের কতদিন পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়া যায়?
হাসপাতাল থেকে অপারেশনের তিন দিন পর ছুটি দিয়ে দেওয়া। হয়। বাড়ীতে রােগী কারাের সাহায্যে বা ওয়াকারের সাহায্যে হাল্কা হাটাচলা শুরু করতে পারেন। সপ্তাহ দুয়েক বাদে সিড়ি দিয়ে। ওঠা-নামা করার অনুমতি দেওয়া হয়। ছ’সপ্তাহ বাদে স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু সাইকেল চালানাে বা গাড়ি চালানাের জন্য দু’মাস অপেক্ষা করাই শ্রেয়। | হাঁটুর ব্যথায় কষ্ট পাওয়ার চাইতে হাঁটু প্রতিস্থাপন হচ্ছে। সবচাইতে নির্ভরযােগ্য ও স্থায়ী সমাধান। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে হাঁটু প্রতিস্থাপনের ১৫-২০ বছরের মধ্যে কোনাে সমস্যা দেখা দেয় না।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*