স্তন ক্যানসারের আধুনিক চিকিৎসা এবং’ মাইক্রোল্যাপ

স্তনযুগল নারীর দেহসৌষ্ঠবের অনবদ্য উপাদান। শুধু উপভোগের জন্যই না, সন্তানের লালন-পালনের জন্যও প্রকৃতির এই অপার অবদান অতুলনীয়। তাই স্তনের যেকেননা পীড়াই নারীকে বিব্রত করে, কাতর করে। বিশেষ করে স্তনে যদি কোন অস্ত্রোপচারের আশঙ্কা থাকে তখন শুরু হয় আতঙ্ক আর হতাশা। নানান রোগেই স্তনে অল্পবিস্তর। অস্ত্রোপচারের আশঙ্কা থাকে বটে, কিন্তু স্তনে যখন ক্যানসার ধরা পড়ে তখন পরিস্থিতি আর স্বাভাবিক থাকে না। কারণ, তখন রোগের ভীতির সঙ্গে জোটে স্তচ্ছেদনের ভীতি। এই ভীতি সামলে ওঠা সত্যিই কষ্টকর।
যে স্তনে ক্যানসার ধরা পড়ে তাকে উৎপাটন করে ফেলাই একসময় ছিল চিকিৎসার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শুধু স্তনই না, তার সঙ্গে লাগােয়া মাংশপেশি, অন্যান্য কোষকলা, এবং প্রন্থিগুলোকেও উৎপাটন করা হত। রোগিণীর মানসিকতার চেয়ে রােগের চরিত্রই ছিল প্রধান বিচার্য বিষয়। তাই শেষ পর্যন্ত রােগিণীর পক্ষে অমন বিকলাঙ্গ অবস্থা মেনে নেওয়া ছাড়া তেমন উপায়ও ছিল না। এটাই ছিল চিকিৎসার গ্রহণযোগ্য রীতি। কিন্তু সময় পাল্টায়, বিজ্ঞানের সূচিমুখও পাল্টায়, রীতিও পাল্টে যায়।
আজকাল কিন্তু চিকিৎসায় অনম অঙ্গোপাটনের বদলে অঙ্গরক্ষার দিকেই বেশি নজর দেন। কারণ, ক্যানসার বিজ্ঞান আগের তুলনায় আরো স্বচ্ছ হয়েছে। প্রযুক্তিও তার বাল্যাবস্থা কাটিয়ে যৌবনে উপনীত হয়েছে। তার ফলে শুধু অস্ত্রোপচারের ধরনই না, কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপিও আগের তুলনায় উন্নত হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, অনেক সময় অমন অঙ্গহানি না করেও, অস্ত্রোপচারের সঙ্গে ক্যানসারের অন্যান্য চিকিৎসাগুলোর বিজ্ঞান সম্মত মিলন ঘটিয়ে যথাযথ চিকিৎসা সম্ভব। চিকিৎসকরা তার সুযোগ নেবেন বৈকী।
রোগিণীও সেই সুযোগ নেবেন। তবে তার জন্য কয়েকটি পূর্বশর্তও থাকে। স্তনের আকার আর আয়তনের তুলনায় ক্যানসারের মাপটি যথেষ্ট ছােট হাতে হবে। তার সঙ্গে তার রােগিণীকে তার রোগ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। তাঁর ইচ্ছা ও চাহিদার কথা স্পষ্ট করে চিকিৎসককে জানাতে হবে। মনে রাখতে হবে, শুধু চাহিদা, আবদার আর চিকিৎসকের উপচিকীর্ষার উপর ক্যানসারের গতিবিধি নির্ভর করে না। নির্দিষ্ট ক্যানসারের নির্দিষ্ট চরিত্রের উপর নির্ভর করে চিকিৎসার ধরন। ক্যানসার নিয়ে উন্নততর, সভ্যতার দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের এই শিক্ষাই দেয়।।
সেই শিক্ষা অনুযায়ী, চিকিৎসকের দিক থেকে রােগিণীর সঙ্গে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা জরুরি। রােগিণীর দিক থেকেও চিকিৎসকের কাছ থেকে রােগ সম্পর্কে, তার চিকিৎসার ধরন সম্পর্কে, তার চিকিৎসার ধরন সম্পর্কে যথাসাধ্য জেনে নেওয়া সমান জরুরি। এর চেয়েও জরুরি হল চিকিৎসার নিয়মগুলোকে অবহেলা না করা। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষ হয়ে যাবার পরেও দীর্ঘকাল চিকিৎসকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। নিয়মিত পরীক্ষানিরীক্ষাও করতে যেতে হবে। কারণ, অস্ত্রোপচার যে ভাবেই হোক না কেন, ক্যানসার ফিরে আসার আশঙ্কাটি নির্মুল হয় না।
একথা ঠিক যে সেই আশঙ্কা অনেক সময়েই বাস্তবে পরিণত হয় না, কিন্তু তাতে আশঙ্কার গুরুত্ব কমে না। উন্নত চিকিৎসার
অবদানে স্তন ক্যানসার নিয়ে রোগিণী এখন আগের চেয়ে স্বস্তিতে থাকতে পারেন বটে, কিন্তু তাতে রোগ হিসাবে ক্যানসারের
. গুরুত্বও কমে না। আমরা তাই আমাদের প্রতিষ্ঠান, মাইক্রোল্যাপ-এ এই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই চিকিৎসা করে থাকি। যত্নশীল, পরিশীলিত কেমোথেরাপি তো বটেই, তার আগে বা পরে শুনসৌষ্ঠবের প্রতি যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়ে পরিশীলিত অস্ত্রোপচারের এখন আমরা
নিয়মিতই করে থাকি।
এর জন্য আমাদের সঙ্গে আছেন এক দল সুশিক্ষিত, মানবিক চিকিৎসক। রোগীণীরা যে তাদের তদারকিতে স্বস্তিতে থাকেন। তাকে আমরা আশির্বাদ হিসেবে গ্রহণ করি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*