রাগ ও রাগের কারন

রাগকে ইঙরেজিতে Anger বা Annoyence of যায়। এটা একটা প্রাথমিক অনুভুতি। আমরা প্রত্যেক মানুষই কখনো না কখনো রাগ করেছি। অনেক সময় রাগ করা ও তার প্রকাশ প্রয়োজনীয়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাগ এবং বিশেষভাবে রাগের বহিঃপ্রকাশ (রাগে অগ্নিশর্মা)। অসঙ্গত এবং ভবিষ্যতে আফশোস ডেকে আনে। আমি । এখানে রাগের কয়েকটি কারণ আলােচনা করব যা আমার। Clinic -এ প্রায়ই দেখে থাকি।
যদিও রামকৃষ্ণদেব রাগের প্রয়ােজনীয়তার কথা বলে গেছেন। সেই দরকারটা একান্তই exception বা ব্যতিক্রম। হিসাবেই ব্যবহার্য হওয়া উচিৎ অর্থাৎ এটা এমন একটা অস্ত্র যা বহু ব্যবহারে তীক্ষ্ণতা হারায়। কিছু ক্ষেত্রে রাগের বুদ্ধিযুক্ত ব্যবহার আমাদের পক্ষে সুবিধাজনক। যেমন- পরীক্ষার ফল খারাপ হলে কোন ছাত্র রাগের বশে ভাল পড়াশােনা বা অন্য কাজে কৃতিত্ব অর্জন করতে পারে। এক্ষেত্রে কিন্তু রাগের উত্তেজনাপূর্ণ তাৎক্ষনিক । বহিঃপ্রকাশ হয় না।
রাগবশত উত্তেজনা প্রায় সব সময়েই ক্ষতিকর। নিজেদের ভিতরের অস্থিরতা সামলাতে না পারাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাগ প্রকাশের কারণ। যে মানুষগুলির সহজাত নেতৃত্ব। প্রবণতা (leadership ability) প্রখর তারা নিজেদেরকে ভালো বোঝেন সুতরাং রাগ সংবরণও করতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে লক্ষ্য করি উচ্চপদস্থ ও সফল আধিকারিকদের ক্ষেত্রে। অপরপক্ষে অনেকের। কথাই জানি যাঁরা অন্যান্য ক্ষেত্রে যথেষ্ট পারদর্শি হওয়া সত্তেও ধৈর্য্যের অভাব ও রাগের কারণে ততটা কৃতকার্য হতে পারেন নি। রাগ এক প্রকার ভিতরের অস্থিরতা অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়া (Transfer of one’s internal anxieties)। স্বাভাবিক ভাবেই, নিশানার। মানুষটি এত অস্থির হয়ে পড়েন। প্রথম জনের পক্ষে তা । খারাপ।
সুতরাং রাগ ও রাগের বহিঃপ্রকাশ কমাতে হবে। কিন্তু কিভাবে? এর জন্য জানা দরকার রাগের কারণগুলি। • কয়েকটি মানষিক রোগে রাগ বেড়ে যায় যেমন, হতাশা বা বিষাদের কিছু ক্ষেত্রে রাগ বা Irritability বাড়ে। এক্ষেত্রে, নেগেটিভ চিন্তাভাবনাই রাগের কারণ। উল্টোদিকে, বাইপোলার অসুস্থতার ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসবশত অন্য মানুষকে দাবড়ে ছোট করে দেওয়ার প্রবণতাও রাগ বা Irritability রূপে প্রকাশ পায়। সঠিক ডায়াগনসিস হলে ওষুধ খেলে বা কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে এগুলির চিকিৎসা সম্ভব। • স্কিজোফ্রেনিয়া রোগেও রাগ প্রায়শই দেখে থাকি। কোনো প্রাণি যদি ভয় পায় আত্মরক্ষার প্রয়োজনেই রাগ স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে ওষুধের দ্বারা ভয় কমলেই রাগও কমে।
• স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে রাগ বা বাড়িতে পারিবারিক অশান্তি বহু ক্ষেত্রেই মানষিক রোগের জন্য হয়। প্যারানয়েড পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার (প্যারানয়েড ব্যক্তিত্বজনিত রােগ) বা ব্যক্তিত্ব জনিত অসুস্থতায় আমরা অনেক ক্ষেত্রেই ভূলবশত ভাবি। আমাদের বুঝি ছােট করা হচ্ছে। বা হেয় করা হচ্ছে। এক্ষেত্রেও রাগ স্বাভাবিক। মানষিক ডাক্তারবাবুরা এর সফল চিকিৎসা করতেই পারেন। • বাচ্চা বা বড়দের যদি এ্যাসপার্জার (Asperger)। সিনড্রোম বা অটিসম থাকে রাগ
তাতেও হয়। • কিছু ক্ষেত্রে রাগ শুধুমাত্র মানষিক নয়। নার্ভের ররোগের ক্ষেত্রেও হয়। যেমন, কিছু মস্তিষ্কের রোগ, যা প্রাথমিক ভাবে রাগ হিসাবে প্রকাশ পায়। নেশাও রাগের একটি সাধারণ কারণ যার চিকিৎসা সম্ভব।
আপনার বা আপনার পরিচিত কোন মানুষের রাগ বা রাগের বহিঃপ্রকাশ যদি আপনাকে চিন্তিত করে তাহলে । একজন ভাল Psychiatrist বা মনোবিদের পরামর্শ নেওয়ার কথা ভাবুন।