চুল তার কবেকার….

চুল নিয়ে সচেতনতার অভাব আমাদের দেশে যেন কখনোই মেটার নয়। যত ধরনের বস্তাপচা টোটকা আর অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সুস্থ চুলকে অসুস্থ করে তোলার প্রচেষ্টা প্রতিনিয়তই চোখে পড়ে। এতে চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি যেমন বাধা প্রাপ্ত হয় তেমনি চুলের সমস্যার বিজ্ঞানসম্মত নিরাময়ও অসম্ভব হয়ে যায়। | আমাদের দেশে চুলের প্রধান যে সমস্যা তা হচ্ছে চুল উঠে যাওয়া বা চুল পড়ে যাওয়া তার সঙ্গে অকালপক্কতা এবং খুসকির সমস্যাও কিছু পাওয়া যায়। তবে চুল ওঠা বা টাক পড়া নিয়ে আমরা সবাই একটু বেশী সচেতন। তারই অঙ্গ হিসেবে যেই দেখা যায় চুল পাতলা হচ্ছে ও ট্রাকের চাদমাটির আরও কাছে সরে। আসছে তখনই নানা বিজ্ঞাপনের ফাদে পা দিয়ে বা বহুযুগের প্রচলিত ধারনার বশবর্তী হয়ে চালু হয়ে যায় টোটকা থেকে অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা। আসলে এর জন্য দায়ী হচ্ছে আমাদের ভ্রান্ত চিন্তা ও জীবনবোধ। | আচ্ছা এখানে পাঠকদের একটা প্রশ্ন করা যাক – ধরুন আপনার লাগাতার পেট ব্যথা হচ্ছে হয়তো বমিও হয়ে যাচ্ছে – তখনও কি আপনি টেটেকার উপর ভরসা রাখবেন? না সরাসরি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে পরীক্ষা করিয়ে বুঝে নেবেন সমস্যার মূল কোথায়? শরীরের অন্য অসুখের ক্ষেত্রে যখন যথাযথ পরীক্ষা ও বিজ্ঞানমনস্কতার পরিচয় দিচ্ছেন তখন চুলের ক্ষেত্রে এই অবহেলা কেন? ভাবতে অবাক লাগে যারা রূপ সচেতন তারাও অনেক সময় এই ধরনের ভুল করে থাকেন! | তাই চুলের সমস্যা শুরু হলে প্রথমেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। তাতে শুরুতেই সমস্যার গতি প্রকৃতি নির্ধারণ করা যায়। জীবন-যাপন, সংক্রমণ, সঠিক ভিটামিনের অভাব, হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলেও চুলের ক্ষতি হতে পারে।
তবে চুল ওঠার সব চাইতে আধুনিক ও সাম্প্রতিকতম কারণ হচ্ছে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ সেই সঙ্গে মাথায় আকাশভাঙ্গা’ অবসাদ। অবাক হচ্ছন! আজকের দ্রুতগতির ধাবমান জীবন যাত্রার আবশ্যিক অঙ্গ হচ্ছে এই স্ট্রেস বা মানসিক চাপ। যা শরীরের আরও নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মতো চুলের প্রভূত ক্ষতি করে। একটি বাস্তব ঘটনার উল্লেখ করছি। শ্রীমতী চৌধুরি ( সঙ্গত কারণে ও রোগীর গোপনিয়তা বজায় রাখার স্বার্থে পুরো নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না ) শিক্ষিতা, স্মার্ট বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে বিদেশে সংসার ছিলেন। কিন্তু নানা কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তিনি ফিরে আসেন কলকাতায়। সন্তানের অধিকার পাওয়া নতুন করে জীবনকে গুছিয়ে নেওয়ার তাগিদে শুরু হয় তাঁর লড়াই। ক্রমাগত মানসিক চাপ, ভাঙ্গা সংসার নিয়ে অবসাদ এই নিয়েই তিনি ডুবে ছিলেন। হঠাৎ একদিন মধ্য ৩০-এর শ্রীমতি চৌধুরি লক্ষ্য করেন যে যথেষ্ট তেল, শ্যাম্পু ও স্পায়ের চর্চার পরেও চুল উঠছে হু-হু করে। বেশ ভেঙ্গে পড়েছিলেন তিনি। আমাদের ক্লিনিকে আসতে সব খুলে বলার পর চিকিৎসা শুরু হয়। এক্ষেত্রে দেখা যায় যে তার মানসিক অবসাদ ক্রমশ দেহ-মনকে গ্রাস করে রাখাতে তিনি দ্রুত চুল হারাচ্ছিলেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে এবং চিকিৎসা শাস্ত্র অনুসারে চুল উঠে যাওয়ার এবং টাক পড়ার পিছনে আজকের আধুনিক সমাজের স্ট্রেস, মানসিক অবসাদের মতোই অনিয়মিত খাদ্যাভাস, দেহে ভিটামিনের অপ্রতুলতা, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ দূষণ, তালুতে সংক্রমণ, বংশ পরম্পরা, লাইফ স্টাইল । ডিসঅর্ডার সহ নানা কারণ চুল ওঠার পিছনে দায়ী। কারও ক্ষেত্রে এর শুধু মাত্র কোনো একটি আবার কেউ কেউ একাধিক কারণে আক্রান্ত হন এই সমস্যায়। তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে যাদের জীবন যাপন সংক্রান্ত অর্থাৎ লাইফ স্টাইল ডিসঅর্ডার থেকে সমস্যাগুলি হয় তাদের লাইফ স্টাইলে সামান্য রাশ টানলেই এই সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু তার পাশাপাশি চাই নিয়ম মতো চিকিৎসাও, যা নিতান্তই বিজ্ঞানসম্মত হবে।
আমাদের কাছে যারা চুলের সমস্যা নিয়ে আসেন তাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমরা মূলত চার ধরনের পদ্ধতি প্রয়োগ করে থাকি। চুল পড়ার ধরন অনুসারে পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়। যাদের চুল সবে মাত্র পড়তে শুরু করেছে বা পরিবারে টাক পড়ার প্রবনতা রয়েছে তাদের জন্য প্রতিরোধক বা প্রিভেনটিভ চিকিৎসা পদ্ধতিই শ্রেয়। যাদের অনেকটাই কমে গেছে তাদের জন্য অতি দ্রুত ওষুধ দিয়ে মেডিকেল ট্রিটমেন্ট শুরু করতে হয়। যাতে ক্ষতি হওয়া জায়গায় পুনরায় চুল গজায়। অনেকের আবার গোটা মাথার কোনো অংশে চুল কমছে তাদের ক্ষেত্রে সাজিকাল বা প্রতিস্থাপন মূলক চিকিৎসা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। যার পরিচিত নাম হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট। কিছু ক্ষেত্রে এই তিন পদ্ধতির কোনোটিই যখন কার্যকরী হয় না তখন শল্য চিকিৎসা না করে হেয়ার রিপ্লেসমেন্ট পদ্ধতির অবলম্বন নিতে হয়। এই চিকিৎসায় আমরা বর্তমানে এক আন্তর্জাতিক মানের স্ত্রীপ অ্যাড়হায়ার টেকনিক নামে বিশেষ

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*